সাভার প্রতিনিধি :
শ্বশুর বাড়িতে মা হওয়ার প্রমান করতেই শিশু চুরি করে নারী। সাভারের বিনোদ বাইদ এলাকা থেকে গত রবিবার ৫ মাসের শিশু চুরি করে পালিয়ে যায় বেড়াতে আশা এক নারী। এমনই ভয়ংকর চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। সোমবার শিশু আব্দুস সামাদের পিতা মুন্নাফ খাঁন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। মামলা সূত্রে জানা যায় সাভার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বিনোদ বাইদ নুর নাহার ভিলায় পোশাক শ্রমিক নারীর ৫ মাসের আব্দুস সামাদকে প্রতিবেশী শারমিন এর বাসায় বেড়াতে আশা মীম নামের এক নারী চুরি করে পালিয়ে যায়। সোমবার পুলিশ শারমিন ও তার কথিত প্রেমিক আব্দুল্লাহ কে গ্রেপ্তার করে তিনদিনের রিমান্ডে আনেন। পাশাপাশি শিশু সামাদকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাতে থাকে। তারমিম আক্তার মীম নওগাঁ জেলার বাসিন্দা হলেও তার মা কয়েকবছর ধরে নাটোরে বসবাস করে এবং তারমিম আক্তার মীম গত ৪ বছর দেশের বাহিরে বাহিরে চাকুরি করে আবার দেশে ফিরে এসে রনি কে বিয়ে করে।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ও সাভার মডেল থানার পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩০ শে নভেম্বর সকালে সিলেট শহরের বাঘবাড়ি সোনার বাংলা এলাকার ৯৬ নং একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে শিশু সামাদ কে উদ্ধারসহ তারমিম আক্তার মীম(৩২) ও তার স্বামী রনি(২৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সিলেট থেকে আসামীদের ঢাকার আনার পর মোট ৪ জনকে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চীফ জুডিশিয়াল এম এ সাইফুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে বিকেলে গ্রেফতার হওয়া তারমিম আক্তার মীম জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম রাজু বলেন, আদালতে জবানবন্দিতে তারমিম আক্তার মীম জানান তার স্বামীর সংসার টিকিয়ে রাখার জন্যই আব্দুস সামাদকে চুরি করে নিজের সন্তান বলে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে প্রচার করতে থাকেন। গত ৫ মাস আগে তারমিম আক্তার মীম ৫ মাসের গর্ভবতী বলে সিলেট থেকে চলে আশার পর শ্বশুর বাড়ি ও স্বামীকে জানান গত দেড়মাস আগে সিজার করে তার সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে।
শ্বশুর বাড়ি ও স্বামী রনির চাপে পড়ে সন্তান দেখানোর জন্যই তারমিম আক্তার মীম আব্দুস সামামকে চুরি করে নিয়ে সিলেটে অবস্থান করতে থাকে। কিন্ত শেষ রক্ষা হলো না সকল প্রতারণা ফাস করলো করলো পুলিশ। আদালতে জবানবন্দি শেষে ৪ জন আসামীকেই জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আব্দুস সামাদ এর গর্ভধারণী মা নাজমা বেগম বলেন, গত তিনদিন আমার শিশু সন্তান ছাড়া আমি প্রায় পাগল হয়ে গিয়ে ছিলাম যখন জানতে পারলাম সিলেট থেকে সামাদ উদ্ধার হয়েছে সেই সময় আমার প্রাণ ফিরে আসে। তিনি আরও বলেন পুলিশ সাংবাদিক এবং যারা আমার শিশুকে উদ্ধারে সহযোগিতা করেছে তাদের কাছে চিরকাল রীনি হয়ে গেলাম। নাজমা বেগম আসামীদের কঠিন শাস্তি দাবী করেন।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, মামলা হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিশু কে উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়ে ছিলো। তিনি আরও বলেন প্রাথমিক ধারবা এরা সবাই প্রতারক চক্রের সদস্য। শিশুটিকে পরিবার কে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমার খুব শাস্তি লাগছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।