উপজেলা প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আ.লীগ এই দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে গনতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের কাগজে কলমে রাজধানীতে লিখে ফেলেছে। আগামী ৭ তারিখে শুধু সেই ফলাফল ঘোষণা দেবে সরকার। কাজেই এটা কোন নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোকা দেওয়া যাবে না।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি নির্বাচনের তপসিল দিয়েছে। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে সকল লজ্জা ভুলে গিয়ে দর কষাকষি করে সিট ভাগাভাগি করছে। এটার নাম তো গণতন্ত্র হতে পারে না। যদি সিট ভাগাভাগি করে এমপি নির্ধারিত হয় তাহলে তো এই নির্বাচন ইতিমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাক্ষান করেছে। এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতিমধ্যে হয়েছে।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা কোন বিজয় উদযাপন করতে আসছি তা বর্তমান সরকারকে তুলে ধরতে হবে। এটা কিসের বিজয়, এটাকি এক দলীয় শাসনের বিজয়, নাকি এক নায়কতন্ত্র শাসনের বিজয়? এখানে এমন একটি সরকার চলছে যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না, যারা মানুষকে ভোট দিতে দেয় না, যারা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে ৫২ বছর আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের লাখ লাখ মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। একটি স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য। এই কারনে কি করেছিল? তারা করেছিল গণতন্ত্রের জন্য, এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। এই কথা ভুলে গেলে চলবে না। আজকে আ.লীগ গনতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। তারা চরম দূর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধংস করেছে। আজ ৫২ বছর পরে এসে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এই প্রশ্ন করতে হবে যে, আওমীলীগ যদি দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাহলে আ.লীগকে জবাবদিহি করতে হবে কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশের একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ঔক্যবধ্য করেছি। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রীক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসি। বিএনপি লগি বৈঠার রাজনীতি করে না। শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এই দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো সেই কারনে রাজপথে আছি।
মঈন খান বলেন, মিথ্যা মামলা, হামলা এবং ভুয়া গায়েবি মামলা দিয়ে তারা বিগত ৬ সপ্তাহে আমাদের ২৩ হাজার লোককে কারারুদ্ধ করেছে। এসব ভুয়া মামলা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তারা কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে তারা এক এগারোর ভুয়া মামলা দিয়ে বিদেশে আটকে রেখেছে। তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না৷ আজকে বাংলাদেশের মানুষজেগে উঠেছে, তারা জানে যে, এই দেশে কোন রকমের ধোঁকাবাজি করে কেউ সরকারে থাকতে পারবেনা। আগামিতে ইনশাআল্লাহ আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে অপসারিত করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায়সহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।